কোন এক শান্ত বিকেলে জানালার পাশে বসে আকাশ দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই হয়তো মনে পড়ে যায় পুরনো কোনো দিনের কথা।
শৈশবের খেলার মাঠ, কলেজ জীবনের সেই আড্ডা, কিংবা হারিয়ে যাওয়া কোনো প্রিয় মুখের স্মৃতি।
আর ঠিক তখনই, নিজের অজান্তেই বুক চিরে বেরিয়ে আসে এক গভীর দীর্ঘশ্বাস।
Deedly
Namaz Tracker for Muslims
কত আর পর্ন ভিডিও দেখবেন ভাই? মরবেন তো একদিন। নামাজের কোন খবর আছে? গত সাতদিনে কয় ওয়াক্ত নামাজ মিস করেছেন, হিসাব রেখেছেন? আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করেন এবং চলেন আমরা একসাথে এই আসক্তি থেকে বের হয়ে আসি এবং নামাজে মনযোগী হই।
Join Facebook Groupমনে হয়, ফেলে আসা দিনগুলো বুঝি কেবলই না পাওয়ার আক্ষেপ আর ভুলের সমষ্টি। কিন্তু আসলেই কি তাই? অতীত কি কেবলই একরাশ দীর্ঘশ্বাসের নাম?
আমাদের মনের এক অদ্ভুত প্রবণতা হলো, সে বর্তমানের চেয়ে অতীতকে বেশি আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়।
আর এই ধরে রাখার প্রক্রিয়ায় জন্ম নেয় দুই ধরনের অনুভূতি। প্রথমটি হলো আক্ষেপ। “যদি সেদিন ওই কথাটা না বলতাম,” “যদি ওই সুযোগটা হাতছাড়া না করতাম,” “যদি সম্পর্কটা ধরে রাখার আর একটু চেষ্টা করতাম”—এই ‘যদি’-র চক্রে আটকে গিয়ে আমরা ফেলে আসা সময়গুলোকে ভুলের খতিয়ান বানিয়ে ফেলি।
অতীতের ভুলগুলো বর্তমানের ওপর এক ভারী পাথর হয়ে চেপে বসে, আর প্রতিটি স্মৃতি এক একটি দীর্ঘশ্বাস হয়ে ঝরে পড়ে।
দ্বিতীয় অনুভূতিটি হলো সোনালী অতীতের জন্য হাহাকার। আমরা প্রায়শই অতীতকে এক রঙিন চশমা দিয়ে দেখি।
আমাদের মনে হয়, শৈশব বা কৈশোরের দিনগুলো কতই না নির্ঝঞ্ঝাট ছিল, কতই না আনন্দের ছিল। সেই সময়ের কষ্ট, সংগ্রাম বা অনিশ্চয়তার কথা আমরা বেমালুম ভুলে যাই। এই নিখুঁত করে সাজানো অতীতের ছবির সামনে দাঁড়িয়ে আমাদের বর্তমানকে বড্ড ফিকে, বড্ড বিবর্ণ মনে হয়।
তখন যে দীর্ঘশ্বাসটি বেরিয়ে আসে, তা ভুলের জন্য নয়, বরং হারিয়ে যাওয়া ‘ভালো সময়ে’র জন্য।
কিন্তু ফেলে আসা দিনগুলোকে যদি কেবল এই দীর্ঘশ্বাসের পাল্লায় মাপা হয়, তবে জীবনের এক বিরাট অংশকে অপমান করা হয়।
অতীত কেবল আক্ষেপ বা হাহাকারের নাম নয়, অতীত আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষক।
যে ভুলগুলো একদিন আমাদের চোখে জল এনেছিল, সেই ভুলগুলোই আমাদের শিখিয়েছে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল। যে সম্পর্কগুলো ভেঙে গিয়েছিল, তারাই আমাদের শিখিয়েছে মানুষের মন কতটা জটিল আর ভালোবাসার যত্ন নিতে হয় কীভাবে।
যে ব্যর্থতাগুলো আমাদের পথ আগলে দাঁড়িয়েছিল, সেই ব্যর্থতাগুলোই আমাদের ভেতরের শক্তি আর ঘুরে দাঁড়ানোর সাহসকে চিনিয়ে দিয়েছে।
আজ আমরা যতটুকু পরিণত, যতটুকু জ্ঞানী, তার পুরোটাই তো অতীতের দেওয়া শিক্ষা। ফেলে আসা দিনগুলো হলো সেই সিঁড়ি, যা বেয়ে আমরা আজকের ‘আমি’-তে এসে পৌঁছেছি।
তাছাড়া, অতীত তো কেবল ভুলের সমষ্টি নয়, তা অগণিত সুন্দর মুহূর্তের এক সংগ্রহশালাও বটে।
বন্ধুদের সাথে প্রাণখোলা হাসির বিকেল, পরিবারের সাথে কাটানো কোনো উৎসবের সন্ধ্যা, কিংবা কারো একটুখানি মমতায় সিক্ত হওয়ার স্মৃতি—এইসবই তো আমাদের ফেলে আসা দিনের অংশ। বর্তমানের কঠিন সময়ে এই মধুর স্মৃতিগুলোই তো আমাদের মনের আশ্রয়, আমাদের এগিয়ে চলার প্রেরণা।
ফেলে আসা দিনগুলোকে আমরা কীভাবে দেখব, তা সম্পূর্ণ আমাদের ওপর নির্ভর করে।
আমরা কি তাকে গলার ফাঁস বানিয়ে বর্তমানকে শ্বাসরুদ্ধ করে মারব, নাকি তাকে একটি শক্ত ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাব?
গাড়ির রিয়ার-ভিউ মিররের দিকে আমরা কেবল ততটুকুই তাকাই, যতটুকু পেছনের রাস্তাটা দেখে বর্তমানকে নিরাপদে চালানো যায়।
কিন্তু যদি আমরা সারাক্ষণ শুধু পেছনের দিকেই তাকিয়ে থাকি, তবে সামনের পথটা দেখব কখন?
দিনশেষে, ফেলে আসা দিনগুলো কেবলই দীর্ঘশ্বাস নয়। হ্যাঁ, সেখানে আক্ষেপ আছে, ভুল আছে, না পাওয়ার বেদনা আছে।
কিন্তু তার পাশাপাশি সেখানে শিক্ষা আছে, শক্তি আছে, আর আছে অমূল্য কিছু স্মৃতি।
অতীত হলো সেই সুর, যা ছাড়া আমাদের বর্তমানের গানটি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই দীর্ঘশ্বাসটুকুকে সঙ্গী করেই চলুন অতীতের সুন্দর স্মৃতিগুলোকে মনে রাখি আর তার থেকে পাওয়া শিক্ষা নিয়ে বর্তমানকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলি।