আমার বাবা একজন সরকারী কর্মকর্তা।
মাসে ভালো পরিমাণ আয় করেন। আমি বাড়ির মেজো মেয়ে। এইবার এসএসসি দিয়েছি। আমার বাবা আমার জন্মের সময় মায়ের পেট থেকে বের করা বাদে আজ পর্যন্ত অসুস্থের জন্য কোনো দিন চিকিৎসা করায়নি।
শুধু আমাকে না, ভাই ,বোন, মা কাউকেই না।
টাইফয়েডে মরে যাওয়ার মতো অবস্থা, সেই সময় পর্যন্ত আমার দিকে ফিরে তাকায়নি। কোনো বিপদে পড়লে সাহায্য করা তো দূর! তার মুখের ভাষা এত্ত পরিমাণ নোংরা যে এসব ছাড়া কথাই বলতে পারেন না।
অফিস থেকে বাসায় এসেই ঘরে বিনা কারণে অশান্তি করেন। আমাদের শান্তি সহ্য করতে পারেন না। আমি একজন মেয়ে। আমার প্রাইভেসির জন্য নিজের রুমে দরজা লাগানো লাগে।
দরজা লাগানো দেখে আমার রুমের সিটকিনি পর্যন্ত ভেঙে দিছে। গরমের মধ্যে ফ্যান অফ করে দিয়ে চলে যায়। খাওয়া দাওয়ার অভাবে দুর্বল আমি। বাসায় ডিম আনলে সেখান থেকে একটা ডিম কম দেখলে ডিম তার ড্রয়ারে তালাবদ্ধ করে রেখে দেয়। নয়তো আনা বন্ধ করে দেয়।
শুনলে অবাক হবেন, আমার নরমাল ভাবে বাসায় পড়ার জন্য কোনো ড্রেস তিনি কিনে দেন না, ঈদের সময় বছরে একবার টাকা দেন। অর্থাৎ আমি বছরে একটা ড্রেস কিনি।
সবচেয়ে বড় যেই সমস্যায় ভুগছি তা হলো, আমি মাত্র কলেজে উঠেছি। ভর্তির টাকা পর্যন্ত আমার মায়ের জমানো টাকা থেকে দিতে হয়েছে। কলেজ ড্রেসের জন্য বান্ধুবিকে দিয়ে কথা বলতে পাঠালে যা ইচ্ছা বলে দেন, বলেন বিয়ে করতে।
অথচ তিনি নিজের টাকায় কোনোদিন বিয়েও করাবেন না স্কুলের বেতন দিতো, তাও অনেক ঝামেলার পর। সবসময় মুখ বন্ধ করে থাকতাম। অধৈর্য্য হয়ে একটূ মুখ খুললে বতন দেওয়া বন্ধ করে দিতেন। আপনাদের কাছে প্রশ্ন, এরকম করার কারণে আমি যেই পরিমাণ ট্রমাটাইজড হয়ে গেছি এর দায় ভার কে নিবে?
সব কিছু নিয়ে একটা ভয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বিপদে সাহায্য পাই না, পড়ালেখার জন্য বেতন দেওয়া নিয়ে ঝামেলা করে, নোংরা মুখের ভাষা ব্যবহার করে, অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখায় না, ঘরে থাকলে যেইভাবে পারে অশান্তি করে।
তার এইসমস্ত ব্যাপার আমাদের বিল্ডিং এর সবাই জানে। যার কারণে কারও চোখে চোখ রাখতে পারি না, প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হই নাক মুখ ঢেকে। একটা বদনাম আমাদের ফ্যামিলির।
সত্যি বলতে আমি অনেক বেশি ট্রমাটাইজড, প্রচুর হিনম্মন্যতায় ভুগছি। আমি জানি না আমার ভবিষ্যত কি, কিভাবে জীবনকে সামনে নিয়ে আগাবো। বয়স মাত্র ১৭।
আমার কি করা উচিত?